Thursday, October 26, 2017

জগদ্ধাত্রী পুজার ইতিহাস


জগদ্ধাত্রী পুজার ইতিহাস

জগদ্ধাত্রী পূজা বাঙালি হিন্দু সমাজের একটি বিশিষ্ট উৎসব হলেও, দুর্গা বা কালী পূজার তুলনায় এই পূজার প্রচলন অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে ঘটে। অষ্টাদশ শতকে নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগরে এই পূজার প্রচলন করার পর এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। যদিও দেবী জগদ্ধাত্রী যে বাঙালি সমাজে একান্ত অপরিচিত ছিলেন না, তার প্রমাণও পাওয়া যায়। শূলপাণি খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে কালবিবেক গ্রন্থে কার্তিক মাসে জগদ্ধাত্রী পূজার উল্লেখ করেন। পূর্ববঙ্গের বরিশালে খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে নির্মিত জগদ্ধাত্রীর একটি প্রস্তরমূর্তি পাওয়া যায়। বর্তমানে এই মূর্তিটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ সংগ্রহশালার প্রত্নবিভাগে রক্ষিত। কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বকালের আগে নির্মিত নদিয়ার শান্তিপুরের জলেশ্বর শিবমন্দির ও কোতোয়ালি থানার রাঘবেশ্বর শিবমন্দিরের ভাস্কর্যে জগদ্ধাত্রীর মূর্তি লক্ষিত হয়। তবে বাংলার জনসমাজে কৃষ্ণচন্দ্রে পূর্বে জগদ্ধাত্রী পূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি। কেবল কিছু ব্রাহ্মণগৃহে দুর্গাপূজার পাশাপাশি জগদ্ধাত্রী পূজা অনুষ্ঠিত হত।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজা সম্পাদনা
কৃষ্ণনগর রাজবাটীর জগদ্ধাত্রী পূজা
নদিয়া জেলার সদর কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়।
কিংবদন্তী অনুসারে নবাব আলিবর্দির রাজত্বকালে মহাবদজঙ্গ রাজার নিকট থেকে বারো লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করেন। নজরানা দিতে অপারগ হলে তিনি রাজাকে বন্দী করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যান। মুক্তির পর নদীপথে কৃষ্ণনগরে প্রত্যাবর্তনের সময় ঘাটে বিজয়াদশমীর বিসর্জনের বাজনা শুনে তিনি বুঝতে পারেন সেই বছর দুর্গাপূজার কাল উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপূজার আয়োজন করতে না পেরে রাজা অত্যন্ত দুঃখিত হন। সেই রাতে দুর্গা জগদ্ধাত্রীর রূপে রাজাকে পরবর্তী শুক্লানবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দুর্গার পূজা করার আদেশ দেন। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা ১৭৬৬ সালে। কেউ কেউ আবার কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপৌত্র গিরিশচন্দ্রকে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবর্তক মনে করেন। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির দরজা জগদ্ধাত্রী পূজার সময় আজও খোলা থাকে। পূজা পুরনো প্রথা মেনে হয় শুধুমাত্র নবমী তিথিতে।
১৭৭২ সালে রাজবাড়ির দেখাদেখি কৃষ্ণনগরের চাষাপাড়ায় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রজারা জগদ্ধাত্রী পূজা শুরু করেন। বুড়িমার পূজা নামে পরিচিত এই পূজা শুরু হয়েছিল ঘটে ও পটে। প্রথম দিকে স্থানীয় গোয়ালারা দুধ বিক্রি করে এই পূজার আয়োজন করতেন। ১৭৯০ সাল নাগাদ গোবিন্দ ঘোষ ঘটপটের পরিবর্তে প্রতিমায় জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন। এখানকার প্রতিমার বৈশিষ্ট্য হল প্রায় সাড়ে সাতশো ভরি সোনায় গয়নায় দেবীপ্রতিমার অলংকারসজ্জা। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের মতে এই দেবী অত্যন্ত জাগ্রতা; তাঁর নিকট সকল মনোষ্কামনাই পূর্ণ হয়।
এছাড়াও বর্তমানে কৃষ্ণনগরে বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পূজা হয় দুই শতেরও বেশি, যা জগদ্ধাত্রী পূজার জন্য বিখ্যাত চন্দননগর মহানগরের চেয়েও বেশি। প্রায় আড়াইশো বছর আগে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পূজা দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন করেন। লক্ষ্মীগঞ্জ প্রতিষ্ঠার কিছুকাল পরেই এই পূজার সূচনা। এই পূজা চন্দননগরে আদি পূজা নামে পরিচিত। এখনও পর্যন্ত পুরুষানুক্রমে দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে পূজার সংকল্প হয়। এখানকার প্রতিমার বৈশিষ্ট্য হল সনাতনরীতির প্রতিমায় সাদা সিংহ এবং বিপরীতমুখী অবস্থানে হাতি। শোনা যায়, বিসর্জনের সময় আদি প্রতিমা জলে পড়লেই শুশুক বা সাপের দেখা পাওয়া যায়। তবে এখন ঘটা করে জগদ্ধাত্রী পুজা
হয়ে থাকে।

Friday, October 13, 2017

রামপ্রসাদের সাধনপীঠ


রামপ্রসাদের সাধনপীঠ সম্পর্কে আলোচনা করার আগে কিছু বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা উচিত। প্রসঙ্গত সাবর্ণ বংশের লক্ষ্মীকান্তের প্রপৌত্র পঁচিশতম পুরুষ রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরী(জন্ম ১৬৫২ খ্রিঃ) পরমসিদ্ধ তান্ত্রিক সাধক ছিলেন। রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরী কুমারহট্ট হাভেলিশহরে( হালিশহরে) সাধনপীঠ প্রতিষ্ঠা করেন। সাধনপীঠ প্রতিষ্ঠা করা মোটেই সহজ কাজ নয়। এরজন্য পঞ্চবট, পঞ্চমুণ্ডের আসন স্থাপন করতে হয়। কোটিবার মহাবিদ্যার বীজমন্ত্র জপ করা, কোটিবার হোমযজ্ঞ সম্পন্ন করা হলেই তবে আসনটি পীঠাসনে পরিণত হয়। শাক্ত তান্ত্রিক রামকৃষ্ণ এই নিয়মেই সিদ্ধপীঠ রচনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাঁর নাম অনুসারে সিদ্ধপীঠটি "রামকৃষ্ণ মণ্ডপ" নামে আখ্যা লাভ করে।
Ramprasad sen png photo
 কুমারহট্ট হালিশহরে এরপর আরেকজন মহাসাধকের জন্ম হয়। তিনি প্রখ্যাত সাধক রামপ্রসাদ সেন (জন্ম ১৭২০)। রামপ্রসাদ জন্মসূত্রে বৈদ্য, শাক্ত কালীভক্ত ছিলেন। সঙ্গীতের কথা ও সুরের মাধ্যমে কালীমাতার সঙ্গে যেন সংলাপ করতেন। রামপ্রসাদের সাধনা ও কবিত্ব মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ায় হালিশহরের সাবর্ণ বংশের জমিদাররা ১৭৫৪ থেকে ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রামপ্রসাদকে কৃষিযোগ্য জমি, বাস্তুভিটাসহ রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর সিদ্ধপীঠ দান করেন। ক) সাবর্ণ রায় চৌধুরী বংশীয় দর্পনারায়ণ, শ্রীরাম রায়, কালীচরণ রায়- তিনজনে একত্রে মোট ৮ বিঘা জমিদান করলেন। তারিখ ২এপ্রিল, ১৭৫৪ খ) হালিশহরের সাধক রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ সুভদ্রাদেবীর অপুত্রক থাকায় ' সবৃক্ষবাটি আন্দাজ ১বিঘা জমি রামপ্রসাদকে বসবাস ও সাধনার জন্য দান করেন। তারিখ- ১৫ ই এপ্রিল, ১৭৫৮ গ) সাবর্ণ রায় চৌধুরী বংশীয় দর্পনারায়ণ এককভাবে ২বিঘা জমি দান করেছিলেন। তারিখ- ১লা জুলাই, ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে অনেকের মতে সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার থেকেই তাকে "কবিরঞ্জন" উপাধি প্রদান করা হয়। সাধক রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্রবধূ সুভদ্রাদেবী কর্তৃক তাঁর শ্বশুরের নির্মিত "রামকৃষ্ণধাম" রামপ্রসাদ সেন দানস্বরূপ ১৫ই এপ্রিল,১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে পান। কালীমাতা রামপ্রসাদের পত্নীকে উক্ত সাধনপীঠে সাধনা করতে বলেন।সেই সাধনায় রামপ্রসাদ সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। উক্তধামের সেই পঞ্চবটীতলা এবং পঞ্চমুণ্ডাসন আজও বর্তমান। রামপ্রসাদ সেনের তিরোধানের পরে প্রায় ষাটবছর জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে পড়েছিল। পরে উদ্দোগ নিয়ে স্থানটিকে দর্শনযোগ্য তীর্থস্থানে পরিণত করা হয়েছে।


সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের উল্লেখযোগ্য তন্ত্রসাধক রামকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর সাধন প্রেরণা এবং তাঁর নির্মিত পঞ্চবটীতলা ও পঞ্চমুণ্ডাসনের কথা সাধক রামপ্রসাদ সেন তাঁর "বিদ্যাসুন্দর" কাব্যে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে এই মহাপ্রাপ্তি যে তাঁর সিদ্ধিলাভের অনুকূল ও সহায়ক হয়েছে তাও স্বীকার করেছেন। কথিত আছে, সাধক রামপ্রসাদ সেন ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে কালীপুজোর পরদিন ভোরে গঙ্গায় কালীমাতার মূর্তি বিসর্জন দেওয়ার কালে গঙ্গাবক্ষে বিলীন হয়ে যান। কিন্তু তাঁর তিরোধানের সময়টি সঠিক নয়। কারণ নীচের উল্লেখিত দস্তখৎ প্রমাণ করে যে তিনি ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাস পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। ফলে তাঁর তিরোধান ঘটে ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে বা তার পরে। ১২০১ বঙ্গাব্দের, বৈশাখমাসে (ইং এপ্রিল,১৭৯৪) হালিশহরের সাবর্ণ রায় চৌধুরী বংশের এক কবুলতি পত্রে ইসাদী হিসাবে সাধক রামপ্রসাদ সেনের দস্তখৎ। সুতরাং ১৭৯৪-৯৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ৭৪-৭৫ বছর বয়সের মধ্যে তাঁর মহাপ্রয়াণ ঘটে। উক্ত কবুলতি পত্র বড়িশায় সাবর্ণদের সংগ্রহশালাতে রয়েছে।

Friday, September 29, 2017

শ্রীশ্রীসারদা অষ্টোত্তর শতনাম

🌺শ্রীশ্রীসারদা অষ্টোত্তর শতনাম🌺

ত্বং মে ব্রহ্মসনাতনী মা।১।।
ব্রহ্মশক্তিময়-রুপিনী মা।২।।
সচ্চিৎ সুখযুত রূপিণী মা।।৩।।
সহস্রার-শিবসঙ্গিনী মা।।৪।।
অগাধলীলা-রূপিনী মা।।৫।।
চিন্ময়রূপ-বিলাসিনী মা।।৬।।

১। মা! (স্বরূপত) তুমি নিত্যা(শুদ্ধা) ব্রহ্মরূপিনী।
২। মা! ব্রহ্ম ও তদ্ভিন্ন শক্তিও তোমারি রূপ।
৩। মা! তুমি সচ্চিদানন্দরূপিনী।
৪। মা! তুমি সহস্রারে পরমশিব সহ বিরাজিতা!
৫। মা! তোমার নানা লীলাবিগ্রহ বুদ্ধির অগম্য!
৬। মা! তুমি চিন্ময়ীরূপে বিবিধ বিলাসকারিণী!




আদ্যাশক্তি-লীলাময়ী মা। ৭।।
চিতসুখদায়িনি-তারিণি মা।।৮।।
দুর্গতি- দুর্মতি-নাশিনি মা।।৯।।
মহাকালহৃদি- নতিনি মা।।১০।।
জয়রামবাটি- ধৃতজনি মা।।১১।।
ধর্মগ্লানিবিনাশিনি মা।।১২।।

৭। মা তুমি আদ্যাশক্তিরূপে লীলাচঞ্চলা!
৮। মা তুমি আশ্রিতের জ্ঞান ও সুখপ্রদায়িনী ও পরিত্রাণকারিণি।
৯। মা তুমি শরণাগতের অধোগতি ও অশুভবুদ্ধিদূরকারিণি!
১০। মা তুমি মহাকালের হৃদয়ে নৃত্যশীলা!
১১। মা তুমি পুণ্য জয়রামবাটী গ্রামে আবির্ভূত হয়েছিলে।
১২। মা তুমি ধর্মের গ্লানি বিনাশকারিনী!


আশ্রিতা-শ্যামাসুন্দরি মা।।১৩।।
রামচন্দ্র-দ্বিজ- দুহিতা মা।।১৪।।
মার্গশীর্ষতিথি-পাবনি মা।।১৫।।
অসিত-সপ্তমী-জননী মা।।১৬।।
ক্ষেমঙ্করী-পদভূষিতা মা।।১৭।।
বিশ্বমঙ্গলাগমনা মা।।১৮।।


১৩। মা তুমি জননী শ্যামাসুন্দরীর গর্ভে আবির্ভূতা হয়েছিলে!
১৪।মা তুমি দ্বিজবর পিতা রামচন্দ্রের কন্যারূপে লীলা-বিগ্রহ ধারণ করেছিলে।
১৫। মা! তুমি শুভ অগ্রহায়ণ মাসকে ( নিজ আবির্ভাবের দ্বারা) পবিত্র করেছ!
১৬। মা! তুমি কৃষ্ণাসপ্তমী তিথিতে প্রকটিত হয়েছিলে।
১৭। মা তুমি ক্ষেমঙ্করী ( সর্বশুভদায়িনী) নামে অলংকৃত হয়েছিলে।
১৮। মা! জগতের কল্যাণের জন্যেই তোমার আগমন!




রামকৃষ্ণসহধর্মিণী মা।১৯।।
পঞ্চবর্ষ পরিণীতা মা।।২০।।
ধর্মস্থাপনকারিণী মা।।২১।।
রম্যসরল-পথদরশিনি মা।।২২।।
মাতৃভাব-পরিশোধিনি মা।।২৩।।
ভক্তহৃদয়-অধিবাসিনী মা।।২৪।।


১৯।মা তুমি শ্রীরামকৃষ্ণের সহধর্মিণী।
২০।মা তুমি পাঁচ বছর বয়সকালে পরিনীতা হয়েছিলে।
২১।মা তুমি ধর্মস্থাপনকারিণী।
২২।মা তুমি সকলকে মনোরম ভাব ও সরল সাধন পথ প্রদর্শন করেছ!
২৩।মা তুমি  শুদ্ধ মাতৃভাব জগতে প্রকাশ করেছো!
২৪। মা তুমি (সদা শুদ্ধ) ভক্তহৃদয়ে নিবাস করে থাকো!

জনক-জননী-সুখবরধিনি মা।।২৫।।
দুঃখ-দলিত- জননন্দিনি মা।২৬।।
জগদ্ধাত্রী-নিজরূপিনি মা।।২৭।।
সিংহবাহিনী-পুজিনি মা।।২৮।।
শ্রুতপতি-সাধন-নিরতা মা।।২৯।।
তৎসন্দর্শন-কৃত-মতি মা।।৩০।।


২৫।মা তুমি স্বীয় জনক-জননীর সুখবর্ধন করেছ!
২৬। মা তুমি দুঃখ-নিপীড়িত জনগনকে আনন্দ দিয়ে থাক!
২৭। মা তুমি নিজরূপে সর্বজগতের পালনকর্ত্রী !
২৮। মা তুমি সিংহবাহিনী দেবীকে পূজা করেছিলে।
২৯। মা পতির অলৌকিক দিব্য সাধনের কথা শুনে তুমিও তাঁর চিন্তায় মগ্ন হয়েছিলে।
৩০। মা তুমি পতি সন্দর্শনের জন্যে দৃঢ়নিশ্চয় করেছিলে।


রামকৃষ্ণকৃত-স্বাগতি মা।।৩১।।
পতি-অবলোকন-পুলকিনি মা।।৩২।।
রামকৃষ্ণ-শরণাগতি মা।।৩৩।।
সাধক-পতি-সেবারতি মা।।৩৪।।
‘সরস্বতী’-ইতি লক্ষীণি মা।।৩৫।।
জ্ঞান-দান-শুভ-আগতি মা।।৩৬।।


৩১। মা! তুমি যখন (পিতৃগৃহ থেকে দক্ষিণেশ্বর)এসেছিলে, তোমাকে শ্রীরামকৃষ্ণদেব সাদরে অভ্যর্থনা করেছিলেন।
৩২।মা! পতি সন্দর্শনে তুমি পুলকিতা হয়েছিলে।
৩৩। মা! তুমি শ্রীরামকৃষ্ণের শরণাগত হয়েছিলে।
৩৪। মা! সাধনরত পতির সেবায় তুমি মনোনিবেশ করেছিলে।
৩৫।মা! (শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন) জ্ঞানদাত্রী সরস্বতীরূপে তুমি জগতে অবতীর্ণ হয়েছ!
৩৬। মা! (সকলকে) জ্ঞানদান করবার জন্যেই তোমার শুভ আগমন!



নারায়ণলক্ষী-জনি মা।৩৭।।
শিবপার্বতীসম-উপমিত মা।।৩৮।।
রামচন্দ্রপ্রিয়-জানকী মা।।৩৯।।
কৃষ্ণচন্দ্র-রাধা-সম মা।।৪০।।
নিশীথ সময়- ধ্যায়িনি মা।।৪১।।
লক্ষজপজ্জল-সেবিনি মা।।৪২।।


৩৭।মা! তুমি নারায়ণের সহচরী লক্ষীরূপিনী।
৩৮।মা! তুমি শিবের সঙ্গিনী পার্বতীতুল্যা!
৩৯।মা! তুমি শ্রীরামচন্দ্রের প্রিয় জানকী-সদৃশা!
৪০। মা তুমি শ্রীকৃষ্ণবল্লভা রাধারাণী।
৪১।মা! তুমি গভীর রাতে ধ্যানমগ্ন থাকতে।
৪২। মা! তুমি নিত্য লক্ষ সংখ্যক জপ সমাপনান্তে জলগ্রহণ করতে।


পতিসেবোত্তম-রতিনী মা।।৪৩।।
পতিমনুভোজনমনুভোজিনি মা।।৪৪।।
কঠিনতপাবৃত-মানস মা।।৪৫।।
পূজিল- ষোড়শীরূপিনী মা।।৪৬।।
চরণার্পিত-পতি-জপতপ মা।।৪৭।।
দিব্যভাবভূত-তন্ময় মা।।৪৮।।


৪৩।মা তুমি পতিসেবারূপ উত্তম ব্রত গ্রহণ ও পালন করেছিলে।
৪৪।মা! তুমি পতির ভোজনান্তর ভোজ্য গ্রহণ করতে।
৪৫। মা তুমি দুশ্চর সাধনায় মনোনিবেশ করেছিলে।
৪৬।মা! (শ্রীরামকৃষ্ণ কর্তৃক) তুমি ষোড়শীরূপে পূজিতা হয়েছিলে।
৪৭। মা! পতি পতি শ্রীরামকৃষ্ণ স্বীয় সর্ব জপতপের ফল তোমার শ্রীচরণে অর্পণ করেছিলেন।
৪৮। মা! তুমি (ষোড়শী পূজাকালে) দিব্যভাবাবেশে তন্ময় হয়েছিলে।



ত্যাগে গৌরব-বর্ধিনি মা।।৪৯।।
লজ্জাপটাবৃতেসারদে মা।।৫০।।
রামকৃষ্ণজন-সেবিনি মা।।৫১।।
নরেন্দ্র-দর্শন হরষিনি মা।।৫২।।
আশ্রিত-সন্ততি-তোষিণি মা।।৫৩।।
সেবাতপ-সম্মেলনি মা।।৫৪।।


৪৯। মা! তুমি সর্বদা ত্যাগের গৌরব বর্ধন করেছ!
৫০। মা! সারদা! তুমি সদাই লজ্জারূপ পটে আবৃত হয়ে থাকতে।
৫১। মা! তুমি শ্রীরামকৃষ্ণের ভক্তজনের সেবায় সদা ততপর!
৫২।মা!নরেন্দ্রকে দেখে তুমি আনন্দিতা হতে।
৫৩।মা! শরণাগত সন্তানগণের তুমি সদা সন্তোষ বিধান করো ।
৫৪। মা! তোমার জীবনে সেবা ও তপস্যার মধুর মিলন ঘটেছিলো!



আচন্ডাল-সকরুণা মা।।৫৫।।
করামলমুক্তিকারি মা।।৫৬।।
ধৃত নিজকালীরূপিনী মা।।৫৭।।
দস্যুপরি-অনুকম্পিনি মা।।৫৮।।
পতিবিয়োগ-সন্তপ্তা মা।।৫৯।।
তদ-দর্শনক্রিত-সান্ত্বনি মা।।৬০।।

৫৫। মা! আচন্ডাল সকলের অপরেই তোমার করুণা বর্ষিত হয়েছে।
৫৬।মা! তুমি করস্থিত আমলকী ফলের ন্যায় প্রত্যক্ষ মুক্তিদায়িনী।
৫৭। মা! তুমি নিজের কালীরূপ ধারণ করেছিলে!
৫৮। মা! দস্যুর উপরেও তোমার অনুকম্পা বর্ষিত হয়েছিল।
৫৯।মা! তুমি পতিবিয়োগে নিরতিশয় সন্তপ্তা হয়েছিলে।
৬০।মা! তুমি তাঁর অলৌকিক দিব্য দর্শন লাভ করে সান্ত্বনা পেয়েছি্লে।



বৃন্দাবন-তপশ্চরণা মা।।৬১।।
কৃষ্ণভাব-পরিমগ্না মা।।৬২।।
পঞ্চতপঃ-কৃতসাধনি মা।।৬৩।।
নীলাচল-তপবাসিনি মা।।৬৪।।
রামেশ্বর-শিবপূজনি মা।।৬৫।।
বিশ্বনাথ-ভাবস্থিতা মা।।৬৬।।
৬১।মা! তুমি বৃন্দাবনে কঠোর তপশ্চর্যা করেছিলে।
৬২। মা! তুমি (বৃন্দাবনে) কৃষ্ণচিন্তায় নিমগ্ন হয়েছিলে।
৬৩। মা! তুমি কঠোর পঞ্চতপা-সাধন অনুষ্ঠান করেছিলে।
৬৪। মা! নীলাচলেও তুমি কত তপস্যা করেছিলে!
৬৫।মা! রামেশ্বরে তুমি দেবাদিদেব মহাদেবের সযত্নে পূজা করেছিলে।
৬৬। মা! কাশীতে শ্রীবিশ্বনাথের চিন্তায় তুমি বিভোর হয়েছিলে,।।


অবিমুক্ত কাশী মত মা।।৬৭।।
কীটোহ্যপি মুক্তো মতি মা।।৬৮।।
গঙ্গা-প্রীতিকারিণি মা।।৬৯।।
তদ্বিলীন-পতি-দরশিনি মা।।৭০।।
সকলদেব-সম-দরশিনি মা।।৭১।।
আশ্রিত-করুণা-কারিণি মা।।৭২।।



৬৭। মা! কাশী “অবিমুক্ত ক্ষেত্র” (মোক্ষক্ষেত্র)- একথা তুমি ঘোষণা করেছিলে।
৬৮। মা! (কাশীতে মরণান্তর সামান্য) কীটও মুক্ত হয়- তুমি বলেছিলে।
৬৯। মা! দেবনদী গঙ্গার প্রতি তোমার অতিশয় প্রীতি ছিল।
৭০। মা! পতি শ্রীরামকৃষ্ণ গঙ্গার সাথে মিলিত হয়ে গেলেন- তুমি এই দিব্যদর্শন করেছ।
৭১। মা! তুমি সকলদেবগণকেই তুল্য রূপে দেখতে।
৭২। মা!  শরণাগতজনের প্রতি তোমার করুণা সদা বর্ষিত হত!


ভক্তিজ্ঞানবিধায়িনি মা।।৭৩।।
সর্বজ্ঞানাশ্রয়দায়িনি মা।।৭৪।।
জনতাপত্রয়বারিণি মা।।৭৫।।
রামকৃষ্ণ সঙ্ঘেশ্বরী মা।।৭৬।।
বিরিঞ্চিশঙ্কর-বন্দিনি মা।।৭৭।।
জগজ্জননি জয়দায়িনি মা।।৭৮।।




৭৩। মা! তুমি ভক্তি ও জ্ঞানপ্রদায়িনি।
৭৪। মা! তুমি সকল প্রাণীকেই আশ্রয় দান করেছ।
৭৫।মা! তুমি সর্বজীবের তাপত্রয় নিবারণ করেছ!
৭৬। মা! তুমি শ্রীরামকৃষ্ণ সঙ্ঘের চালয়িত্রী।
৭৭। মা! ব্রহ্মা-শঙ্করও তোমার বন্দনায় সদা তৎপর !
৭৮। মা! তুমি জগজ্জননী, তুমিই সকলকে বিজয় প্রদান করে থাক।!


হৃদগত-রামকৃষ্ণ-মতি মা।।৭৯।।
সাক্ষাৎ-বাণী-রুপিণি মা।।৮০।।
রামকৃষ্ণ-পর-প্রাণা মা।।৮১।।
শুদ্ধজ্ঞান-প্রদায়িনি মা।।৮২।।
মাতৃভাব-পরিচারিণি মা।।৮৩।।
প্রাণি-মাতৃপদধারিণি মা।।৮৪।।

৭৯। মা! তুমি হৃদয়ে সদা শ্রীরামকৃষ্ণের চিন্তায় মগ্ন।
৮০। মা! তুমি সাক্ষাৎ সরস্বতী-রুপিণী।
৮১। মা! শ্রীরামকৃষ্ণই তোমার প্রাণের প্রাণ ছিলেন।
৮২। মা! তুমি বিমল জ্ঞান প্রদান করে থাকো।
৮৩। মা! মাতৃভাবে তুমি সকলের পরিচর্যা করেছ।
৮৪। মা! তুমি প্রাণী মাত্রেরই “মা” ছিলে।



জন-সংসৃতি-পদধারিণি মা।।৮৫।।
ক্ষান্তি-মহাগুণ-ব্যাপিনি মা।।৮৬।।
কান্তিবরাভয়-দায়িনি মা।।৮৭।।
দশ-মহাবিদ্যা-রুপিনি মা।।৮৮।।
প্রেমানন্দ-সুবর্ষিণী মা।।৮৯।।
সদ্গতি-সম্মতি-কারিণি মা।।৯০।।

৮৫। মা! তুমি সকলের সংসার-ভয় হরণ করেছ।
৮৬। মা! তুমি ক্ষমা প্রভৃতি আদি মহৎ গুণের আধার ছিলে।
৮৭। মা!তুমি কান্তি,বর ও অভয় প্রদান করে থাক।
৮৮। মা! তুমি দশমহাবিদ্যারূপিনী।
৮৯। মা! তুমি সর্বত্র প্রেম ও আনন্দ বর্ষণ করে থাক।
৯০। মা! তুমি সকলের শুভ মতি প্রদান করে থাকো।

দুর্বলজন-বলদায়িনি মা।।৯১।।
দুখ-দৈন্যভয়-নাশিনি মা।।৯২।।
বিদ্যাভক্তি-বিধারিণি মা।।৯৩।।
শাঙ্করি-মুক্তি-প্রদায়িনি মা।।৯৪।।
সারদে পতিত পাবনী মা।।৯৫।।
শোকতাপ-পরিহারিণি মা।।৯৬।।


৯১। মা! তুমি দুর্বল চিত্তে বল প্রদান করে থাকো।
৯২। মা! তুমি সর্বদুঃখ ও দৈন্যভয় নাশ করে থাকো।
৯৩। মা! তুমি সর্ববিদ্যা ও ভক্তির আধার!
৯৪। মা! তুমি কৈবল্যমুক্তি প্রদান করে থাকো।
৯৫। মা সারদে! তুমি পতিত পাবনী।
৯৬। মা! তুমি সকলের শোক ও তাপ হরণ করে থাকো!


খ্রিষ্টনিবেদিতা-তারিণি মা।।৯৭।।
আমজাদমহম্মদ-পাবনি মা।।৯৮।।
ক্রোড়-অভাজন-দায়িনি মা।।৯৯।।
ভক্তিপ্রেম-প্রদায়িনি মা।।১০০।।
সর্বদেবদেবঋষি-পূজিতা মা।।১০১।।
শুভদে মোক্ষদে সারদে মা।।১০২।।


৯৭। মা! খৃষ্টানবংশজাত নিবেদিতাকে তুমি গ্রহণ করেছিলে।
৯৮। মা! ইসলাম বংশীয় (দস্যু) আমজাদকেও তুমি শুদ্ধ ও পবিত্র করেছিলে।
৯৯। মা! ভাগ্যহীন সকলকেই তুমি সাদরে ক্রোড়ে গ্রহণ করেছো!
১০০। মা! তুমি সদাই ভক্তি ও প্রেম বিতরণ করে থাকো!
১০১। মা! সর্বদেব ও ঋষিগণ তোমার বন্দনা করে থাকেন।
১০২। মা! হে,মোক্ষদায়িনী মা সারদে! তুমি সকলেরই কল্যাণকারিণি।


মাতৃনাম-শিক্ষাপ্রদ মা।।১০৩।।
ভবসাগর-পারতরণী মা।।১০৪।।
নির্গুণসুত-অনুকম্পিনি মা।।১০৫।।
সচ্চিদ-সুখনিধিরূপিণি মা।।১০৬।।
রামকৃষ্ণ- চিতিলীনা মা।।১০৭।।
আনন্দধাম-প্রস্থিতা মা।।১০৮।।


জয়তু সারদা জয় জয় মা! জয়তু



Thursday, September 28, 2017

কুমারী পূজা কি এবং কেন ???

কুমারী পূজা কি এবং কেন ???
ছোট বেলা থেকেই রামায়ন ও মহাভারতে আমরা অনেক বড় বড় যজ্ঞের কথা শুনে এসেছি। এই দুর্গোৎসবের একটি বড় অঙ্গ হচ্ছে কুমারী পূজা। কুমারী পূজা নিয়ে আমাদের মধ্যে যেন কৌতূহলের কমতি নেই।
ভারত ও বাংলাদেশের রামকৃষ্ণ মিশনসহ বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে অষ্টমীর মহাতিথিতে এই কুমারী পূজা হয়ে থাকে। শাস্ত্রকাররা নারীকে সন্মান ও শ্রদ্ধা করতে এই পূজা করতে বলেছেন।আমাদের সনাতন ধর্মে নারীকে সন্মানের শ্রেষ্ঠ আসনে বসানো হয়েছে। “নিজেদের পশুত্বকে সংযত রেখে নারীকে সন্মান জানাতে হবে”- এটাই কুমারী পূজার মূল লক্ষ্য। বৃহদ্ধর্মপুরাণ-এ রামের জন্য ব্রহ্মার দুর্গাপূজার বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। তখন শরৎকাল, দক্ষিণায়ণ। দেবতাদের নিদ্রার সময়। তাই, ব্রহ্মা স্তব করে দেবীকে জাগরিত করলেন। দেবী তখন কুমারীর বেশে এসে ব্রহ্মাকে বললেন, বিল্ববৃক্ষমূলে দুর্গার বোধন করতে। দেবতারা মর্ত্যে এসে দেখলেন, এক দুর্গম স্থানে একটি বেলগাছের শাখায় সবুজ পাতার রাশির মধ্যে ঘুমিয়ে রয়েছে একটি তপ্তকাঞ্চন বর্ণা বালিকা। ব্রহ্মা বুঝলেন, এই বালিকাই জগজ্জননী দুর্গা। তিনি বোধন- স্তবে তাঁকে জাগরিত করলেন। ব্রহ্মার স্তবে জাগরিতা দেবী বালিকামূর্তি ত্যাগ
করে চণ্ডিকামূর্তি ধারন করলেন। তন্ত্রসার মতে, “১ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বালিকারা কুমারী পূজার উপযুক্ত; তাদের অবশ্যই ঋতুমতি হওয়া চলবে না।”
মেরুতন্ত্রে বলা আছে,
“সর্বকামনা সিদ্ধির জন্য ব্রাহ্মণ কন্যা,
যশোলাভের জন্য ক্ষত্রিয় কন্যা,
ধনলাভের জন্য বৈশ্য কন্যা ও
পুত্র লাভের জন্য শূদ্রকূল জাত কন্যা কুমারী পূজার জন্য যোগ্য।”
গুণ ও কর্ম অনুসারেই এই জাতি বা বর্ণ নির্ধারিত হয়। সেইজন্যই প্রচলিত শাস্ত্র অনুসারে, বিভিন্ন মিশন ও মন্দিরগুলোতে সর্ব মঙ্গলের জন্য ব্রাহ্মণ কন্যাকেই দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। সকল নারীর মধ্যই বিরাজিত রয়েছে দেবীশক্তি। তবে কুমারী রূপেই মা দুর্গা বিশেষভাবে প্রকটিত হয়েছিলেন। তাই, কুমারী রূপে নারীকে দেবীজ্ঞানে সন্মান জানানোর একটি বাস্তব উদাহরন হচ্ছে “কুমারী পূজা”। ঈশ্বরের অনন্ত- ভাব। তাই যে কোনও ভাব অবলম্বন করে ঈশ্বরকে আরাধনা করা যায়। সেজন্য পূজারীরা অনš-ভাবের এক ভাব মাতৃরূপে ঈশ্বরকে আরাধনা করেন।
কুমারী পূজা মাতৃরূপে ইশ্বরেরই একটি আরাধনা।
মনু সংহিতায় আছে, ‘যত্র নার্যন্তু পূজ্য - রামতত্র দেবতাঃ/
যত্রৈতান্তু ন পূজ্যতে সর্বান্তুত্রাফল
াঃ ক্রিয়া’।
এর অর্থ হল, যেখানে নারীরা পূজিত হন সেখানে দেবতার প্রসন্ন। যেখানে নারীরা সম্মান পান না, সেখানে সব কাজই নিষ্ফল।
আবার মহাদেব যোগিনী শাস্ত্রে বলেছেন,
‘কুমারী পূজনং ফলং বক্তু নার্হামি সুন্দরী।/
জিহ্বাকোটি সহস্রৈস্তু বস্তুকোটি শতৈরপি’।
এর অর্থ শতকোটি জিহ্বায় কুমারী পূজার ফল ব্যক্ত করতে পারব না। কুমারীরা শুদ্ধতার প্রতীক হওয়ায় মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনার জন্য কুমারীকন্যাকে নির্বাচন করা হয়। সাধারণত অষ্টমী বা নবমীতে কুমারী পূজা করা হয়। হিন্দু শাস্ত্রে ১ থেকে ১৬ বছর বয়সী অজাতপুষ্পবালাকে কুমারী বলা হয়।
বয়স অনুযায়ী
১ বছর বয়সী কন্যাকে - সন্ধ্যা
২ বছর বয়সী কন্যাকে - স্বরসতী,
৩ বছর বয়সী কন্যাকে - কালিকা,
4 বছরের কন্যা - কালিকা
৫ বছর বয়সী কন্যাকে - সুভগা,
৬ বছর বয়সী কন্যাকে - উমা,
৭ বছর বয়সী কন্যাকে - মালিনী,
৮ বছর বয়সী কন্যাকে - কুব্জিকা,
৯ বছর বয়সী কন্যাকে - অপরাজিতা,
১০ বছর বয়সী কন্যাকে - কালসন্ধর্ভা,
১১ বছর বয়সী কন্যাকে - রুদ্রাণী,
১২ বছর বয়সী কন্যাকে - ভৈরবী,
১৩ বছর বয়সী কন্যাকে - মহালক্ষ্মী
১৪ বছর বয়সী কন্যাকে - পীঠনায়িকা,
১৫ বছর বয়সী কন্যাকে - ক্ষেত্রজ্ঞা এবং
১৬ বছর বয়সী কন্যাকে - অম্বিকা বলা হয়।
হিন্দুশাস্ত্রে এসব নাম জগত মাতার স্বরূপের এক একটি গুণ প্রকাশ করে। প্রায় সর্বজাতীয় কুমারী কন্যাকেই কুমারীরূপে পূজা করা যেতে পারে। তবে কুমারী পূজার জন্য সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছরের কুমারীকন্যাকে মনোনীত করা হয়।
জয় মা দুর্গা🌺 জয় শ্রীরামকৃষ্ণ🌺 জয় মা সারদা🌺 জয় কুমারী মাঈ






Monday, September 25, 2017

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ নামামৃত



শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ নামামৃত
শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম
{স্বামী বিবেকানন্দের প্রিয় শিষ্য শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তী   (‘বাঙ্গাল”) প্রণীত}
জয় জয় রামকৃষ্ণ ব্রহ্মসনাতন।
জয় জয় নরদেহধারী ভূভারহরণ।।
পতিতপাবন তুমি ত্রিতাপদহন,
ব্রহ্মা বিষ্ণু হর তুমি- তুমি নিরঞ্জন।
কামিনী-কাঞ্চন ঘোর আঁধারে মগন।
হেরি ধরা-উদিলে হে তরুণতপন।।
ক্ষুদিরাম গৃহে আসি ধরি নর-কায়।
সর্বধর্ম সমন্বয় করিলে ধরায়।।
“যত মত- তত পথ” আপনি আচরি।
নাশিলে ধরম দ্বন্দ্ব-নব সঙ্ঘ গড়ি।।
জ্ঞান, ভক্তি যোগ কর্ম সমন্বয় করি,
অসম্ভব সম্ভব করিলে নরহরি।।
হেন লীলা কোন যুগে না হয় না হবে।
সময় আসিলে জীব অবশ্য বুঝিবে।।
গুনহীন ব্রহ্ম তুমি-তুমি ধর কায়।
ওঠে,ভাসে,নাশে, সৃষ্টি তোমার ইচ্ছায়।।
আমি কি বলিব প্রভো মহিমা তোমার।
বেদ বিধি নাহি জানে অগম্য অপার।।
নিজগুনে কর দেব! আমারে উদ্ধার।
কৃপা বিনে নাহি দেখি পথ তরিবার।।
স্বপ্নযোগে জানি তোমার দ্বিজ ক্ষুদিরাম।
শৈশবে রাখিল তব “গদাধর”(১) নাম।।
“গদাই”(২) বলিয়া ডাকে চন্দ্রা ঠাকুরানী
“দুলাল”(৩) রাখিল নাম ধনী কামারিণী।।



গয়াবিষ্ণু নাম রাখে ‘প্রানের সেঙ্গাত’(৪)।
চিণু শাঁখারীয়া নাম রাখে জগন্নাথ(৫)।।
হলধারী নাম রাখে ‘জগত- জননী’(৬)।
জটাধারী নাম রাখে ‘রাম-রঘুমনি’(৭)।।
ব্রাহ্মণী বলেন ইনি ‘চৈতন্যঅবতার’(৮)।
নিত্যানন্দ খোলে এবে আবির্ভাব তাঁর ।।
‘অমিয় সাগর’(৯) নাম মাস্টার রাখিল।
কথামৃত রসে যার জগত ভাসিল।।
গিরিশ রাখেন নাম ‘পতিত পাবন’(১০)
বীরভক্ত রামদত্ত বলে ‘জনার্দন’(১১)।।


নরেন্দ্র রাখেন নাম ‘স্বতন্ত্র ইশ্বর’(১২)।
কপাল মোচন(১৩) কভু ডাকে যতিবর।।
রাখাল রাখেন নাম ‘প্রেমের সাগর’(১৪)।
বৃন্দাবন লীলা স্মরি ভাবে গরগর।।
যোগীন্দ্র রাখেন নাম ‘দেব-দিগম্বর’(১৫)।
দেখিয়া অনাদি-লিঙ্গ গঙ্গার ওপর ।।
‘দরদী’(১৬) বলিয়া ডাকে ভক্ত বাবুরাম।
‘নিস্কলঙ্ক চন্দ্র’(১৭) বলি  কভু রাখে নাম।।
‘গুরু মহারাজ’(১৮) নামে ডাকে নিরঞ্জন।
শিবানন্দ নাম দেন ‘ব্রহ্ম সনাতন’(১৯)।।
সুবোধ রাখেন নাম ‘শ্যামা ক্ষেমঙ্করী(২০)।
লাটু মহারাজ বলে ‘ব্রহ্ম-অবতরি’(২১)।।
শশী মহারাজ বলে ‘বাঞ্ছা-কল্পতরু’(২২)।
কালী মহারাজ বলে ‘জগতের গুরু’(২৩)।।
শরত রাখেন নাম ‘জগতের মাতা’(২৪)।
গঙ্গাধর নাম রাখে ‘বিশ্বের বিধাতা’(২৫)।।
হরিরাজ রাখে নাম ‘প্রজ্ঞানন্দ-ঘন’(২৬)।
সারদা ডাকেন বলি ‘সগুণে নির্গুণ ‘(২৭)।।


‘কালের কামিনী’(২৮) বলি ডাকে কেনারাম
তন্ত্রপথে মন্ত্র যবে করিলা প্রদান।।
কালী দানা নাম রাখে কৈবল্যদায়িনী(২৯)
‘অন্তর্যামী’(৩০) নাম রাখে রাণী রাসমণি।।
দেখিয়া মথুর শিব শক্তি একাধারে,
‘বিশ্ব-পিতা-মাতা’(৩১) বলি ডাকে ভক্তিভরে।।
হাজরা রাখিল নাম ‘মায়া-অধীশ্বর’(৩২)
বুঝে না বুঝিল লীলা থেকে একত্তর।।
‘দর্পহারী ‘(৩৩) নাম দিলা বৈষ্ণবচরণ।
হৃদয় রাখিল নাম ‘বিপদ-ভঞ্জন’(৩৪)।।


‘নিস্তারিণী’(৩৫) নামে ডাকে সারদা জননী।
ভিন্ন দেহ ধরি যিনি অভিন্না সঙ্গিনী।।
‘ব্রহ্মশক্তি’(৩৬) বলি করে কেশব নির্ণয়
‘ষোলকলা পূর্ণ’(৩৭) কহে গোস্বামী বিজয়।।
‘দুলালী’(৩৮) বলিয়া ব্রজে ডাকে গঙ্গা মাঈ।
রাধা ভাবে উন্মত্ত হেরিয়ে গোঁসাঞি।।
শ্রীপদ্মলোচন বলে ‘গোলক-বিহারী’(৩৯)
শ্রীশম্ভু মল্লিক ডাকে ‘পারের কান্ডারী’(৪০)।।
চৈতন্য আসনে প্রভু যবে অধিষ্ঠান,
‘গৌরাঙ্গ’ (৪১) বলিয়া ডাকে বৈষ্ণব প্রধান।।
সুরেন্দ্র ‘সর্বজ্ঞ’(৪২) বলি ডাকে নিশিদিন,
মহেন্দ্র ডাক্তার বলে ‘ব্রহ্মানন্দে লীন’(৪৩)।।


শ্রীগৌরী পণ্ডিত দেখি বারুদ বরণা,
‘মহাকালী’ (৪৪) বলি উচ্চে করিল ঘোষণা।।
ওয়াজিদ বলে ইনি ‘পীর পেগম্বর’(৪৫)
কুক দেখে ‘খ্রিস্ট রূপ’ ক্রুশের ওপর।
‘আনানক’(৪৬) বলিয়া কহে সিপাহী কেয়ার
পওহারী বাবা বলে ‘ঈশ্বরাবতার’(৪৮)।।

গৌরী মাতা নাম দিল ‘অধমতারণ’(৪৯)
কভু বলে ‘গোপীনাথ- মদনমোহন’(৫০)।।
গোপালের মাতা কন ‘শ্রীবালগোপাল’(৫১)
ক্ষীর-সর-ননী হাতে ডাকে কত কাল।।
নব রসিকেরা বলে ‘অটুট গোঁসাই’(৫২)
‘আলেখ’(৫৩) বলিয়া ডাকে দরবেশ সাঁই।।
চন্দ্র বলে প্রভু তুমি ‘বিভুতির খনি’(৫৪)
প্রভুর পরশে যবে নিলে পৃষ্ঠমণি।।


অন্নাসন অনুষ্ঠানে ‘রামকৃষ্ণ’(৫৫) নাম।
কলিযুগ মহামন্ত্র রাখে ক্ষুদিরাম।।
তোতাপুরী নাম রাখে ‘শ্রীপরমহংস’(৫৬)
পরশে যাঁহার হবে মায়া-মোহ ধ্বংস।।
‘সর্বদেবদেবীস্বরূপ’(৫৭) সন্ন্যাসীরা কয়
দেখি নিজ নিজ ইষ্ট শ্রীঅঙ্গে বিলয়।।
উপেন্দ্র রাখেন নাম ‘দারিদ্র্যভঞ্জন’(৫৮)
বসুমতী ভবে যার বিজয় কেতন।।
‘নটনারায়ণ’(৫৯) নাম রাখে বিনোদিনী
রঙ্গমঞ্চে শ্রীপ্রভুরে সমাধিস্থ জানি।।

‘দীননাথ’(৬০) বলে ডাকে নাগ মহাশয়।
‘মূর্ত জগবন্ধু’(৬১) বলি বলরাম কয়।।
‘মুক্তিদাতা’(৬২) নামে ডাকে শ্রীমনমোহন।
পূর্ণ কহে ইনি ‘পূর্ণব্রহ্ম নারায়ণ’(৬৩)।।
শ্রীবিদ্যাসাগর বলে ‘দয়ার সাগর’(৬৪)
‘সাধকের চুড়ামণি’ (৬৫) বলে শশধর।।
শ্রীপ্রভুর অঙ্গে অঙ্গে মহাভাব হেরি
ভগবানদাস কহে ইনি ‘রাধা-প্যারী’(৬৬)।।


ভুপতি বলেন ডাকি,ইনি ‘সরস্বতী’(৬৭)
ত্রিশুল-ডমরু কর,ভালে দিব্য জ্যোতি।।
অধর রাখেন নাম ‘জগত-জননী’(৬৮)
প্রবিষ্ট দেখিয়া ইষ্ট বরাভয়-পাণি।।
আনুড়ে ‘শীতলা’(৬৯) নাম রাখে যাত্রীগণ
শীতলার ভাবে যবে সমাধিস্থ হন।।
‘কল্পতরু’(৭০) হয়ে প্রভু কাশীপুর-উদ্যানে
স্বীয় ইষ্ট দেখাইলে ছুঁয়ে ভক্তগণে।।
শ্রীযোগীন মাতা বলে ‘চিদ্ঘনকায়’(৭১)
শিবনাথ বলে ইনি ‘পরশ-পাথর”(৭২)
দলভাঙ্গে বলি নাহি গেল অতঃপর।।
বৈকুণ্ঠ সান্যাল বলে ‘শিব-অবতার’(৭৩)
কোটি রামরুদ্র-বিধি স্ফুলিঙ্গ যাঁহার।।
হরিশ বলেন ইনি ‘কাঙ্গালের হরি’(৭৪)
দীনবন্ধু বলে ‘পর-ব্রহ্ম-অবতারী’(৭৫)।।
দেবীর সম্মুখে দেখি চামর ব্যজন
জগদম্বা ‘জয়া’(৭৬) বলি করে সম্ভাষণ ।।



চন্দ্রভাতি দেখি অঙ্গে শ্রীনবগোপাল
‘রাম রাম’(৭৭) বলিয়া কাটিয়ে গেলো কাল।।
সখিভাবে স্থিত শ্রীদেবেন মজুমদার
‘ত্রিভুবন-স্বামী’(৭৮) বলি করিল প্রচার।।
লছমী বাঈ বলে ইনি ‘ঊর্ধ্বরেতা যোগী’(৭৯)
লছমীনারায়ণ কহে ইনি ‘সর্বত্যাগী’(৮০)।।
তারক দেখেন প্রভু ‘মুক্ত-অষ্ট-পাশ’(৮১)
নবাই চৈতন্য বলে ‘গৌরাঙ্গ প্রকাশ’(৮২)।।
‘অঘটনঘটনাখ্যা’(৮৩) দিল রামলাল
মন্দিরে দেখিয়া দেবী বিকট করাল।।


কলিযুগে ‘আনন্দ-আসন-সিদ্ধ’ শুনি
শ্রীঅচলানন্দ বলে ‘কৌলরাট’(৮৪) ইনি।।
আম-নর-মাংস ভোজ্য যবে দিল আনি
‘প্রচন্ডচন্ডিকা’(৮৫) রূপ দেখিলা ব্রাহ্মণী।।
‘উক্তি’ শুনে সুরেশ কহিল বারবার
নরদেহে রামকৃষ্ণ ‘বিষ্ণু অবতার’(৮৬)।।
‘উত্তম পুরুষ’(৮৭) হেন দেখি নাহি আর
লিপিবদ্ধ করিল প্রতাপ মজুমদার।।
শ্রীকর-পরশে দৃষ্টি খুলিল যখন
‘সন্দেহ-ভঞ্জন”(৮৮) ঘোষে শ্রীহরমোহন।।
‘শান্তিদাতা’(৮৯) নাম দিলা গোলাপ ব্রাহ্মণী
নিরাশ্রয়া যবে কন্যাশোকে উন্মাদিনী।।


খানদানী ভক্তরাজ বলরাম-জায়া
‘গোবিন্দ’(৯০) বলিয়া ডাকে স্বরূপ চিনিয়া।।
অক্ষয় রাখিল নাম ‘করুণানিদান’(৯১)
রামকৃষ্ণ পুঁথি যার বিজয়-নিশান।।
দক্ষরাজ রাখে নাম ‘মহামহেশ্বর’(৯২)
সাধনার পথে যার বিঘ্ন বহুতর।।
ভক্তবীর পল্টু কহে তুমি ‘সারাৎসার’(৯৩)
নরেন্দ্র মিত্রজা কহে ‘বুদ্ধ অবতার’(৯৪)।


‘সদানন্দ’(৯৫) নাম রাখে আবদুল কিশোরী
‘চিন্তামণি’(৯৬) বলে মণি প্রভুরে নেহারি।
‘অর্ধনারীশ্বর’’(৯৭) রূপ অতুল দেখিলা
বলে গেল একদেহে রাধা কৃষ্ণ লীলা।।
স্থুল দেহে শূন্য পথে যান ঝাউতলা
‘ব্যোমচারী’(৯৮) বলি তেঁই হৃদয় ঘোষিলা।
ছায়া নাহি পড়ে যবে সাধনার কালে
‘ছায়াহীন দেবতনু’(৯৯) শ্রীব্রাহ্মণী বলে।।
পাপ পুরুষেরে শ্বাসে করি বহিষ্কার
‘নিষ্কম্প-প্রদীপ’(১০০) খ্যাতি রটিল তোমার।।

চিতাধুম পানে অঙ্গকান্তি আচ্ছাদিলে।
‘অনৈশ্বর্য’(১০১) বলি ভক্তে পরে জানাইলে।।
পদে বিদলিত দেখি নবদূর্বাদল
‘বিশ্বব্যাপী’(১০২) বলি তব চক্ষে বহে জল।।
পৃষ্ঠে ব্যথা ধরি দূর মাঝির আঘাতে
তুমি ‘নিমিত্তোপাদান’(১০৩) জানালে সঙ্কেতে।।
নীলকণ্ঠ কহে তুমি ‘সর্বসিদ্ধিদাতা’(১০৪)
অশ্রুসিক্ত বক্ষ যবে শুনি কৃষ্ণকথা।।
সতত ‘সমাধি মুখ’(১০৫) ভাবে কি অভাবে
কোটি জন্মে হেনস্থিতি জীবে না সম্ভবে।।
শ্রীমুখে অসত্য বাণী নহে কদাচন
সত্যের স্বরূপ তুমি- ‘সত্যনারায়ণ’(১০৬)।
জ্ঞানী কয় ভক্ত কয় তুমি ‘পূর্ণাদর্শ’(১০৭)
তব পদরজে পুত এ ভারতবর্ষ ।।


শ্রীমুখে কহিলে তুমি ‘পূর্ণ অবতার’(১০৮)
রাম রুদ্র বিধি বিষ্ণু কলাংশ যাঁহার ।
অবতার ভৃত্য যার সেই তো এবার

‘রামকৃষ্ণ’ দেহ ধরি-হরিলে ভুভার!

সাধন ভজনে তার নাহি প্রয়োজন
রামকৃষ্ণ পুণ্য নাম যে করে কীর্তন।
অভ্যুদয় শ্রেয়ো দুই লভে এ জীবনে
রামকৃষ্ণ ভজে যেই জীবনে মরণে।।
যেখানে যেখানে নামামৃত হয় গান

রামকৃষ্ণ স্বস্বরূপে তথা অধিষ্ঠান।।

নাহি জানি ধর্ম কর্ম না জানি সাধন
জানি মাত্র রামকৃষ্ণ জীবের জীবন।।
যুক্তি-তর্ক ন্যায় নিষ্ঠা বেদান্ত বিজ্ঞান
থাকো নিয়ে রুচি যার-যাগযজ্ঞ ধ্যান।।
আমার আরাধ্য শুধু রামকৃষ্ণ নাম।
নামে মুক্তি-নামে ভক্তি পূর্ণ মনস্কাম।।
রামকৃষ্ণপদ শিরে করিয়া করিয়া ধারণ,
সাঙ্গ হলো রামকৃষ্ণ নাম সংকীর্তন।।
জন্মে জন্মে স্বামীজীর চরণ কাঙ্গাল।
রামকৃষ্ণ নামামৃত রচিল “বাঙ্গাল”।।


ওম ভগবতে শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণায় নমঃ




Saturday, September 23, 2017

Welcome to my blog.

sstrpd blog-এ সবাইকে স্বাগতম।।
ব্লগটি মূলত ধর্মীয় পোস্ট এবং শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবান্দলোন কে প্রচার করার জন্য।
আশা করছি এই উদ্যোগে আপনাদের সাথে পাব।
sstrpd-র Facebook page ফলো করতে পারেন।
আমার Youtube Channel Subscribe করতে পারেন।
শ্রীশ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব

জগদ্ধাত্রী পুজার ইতিহাস

জগদ্ধাত্রী পুজার ইতিহাস জগদ্ধাত্রী পূজা বাঙালি হিন্দু সমাজের একটি বিশিষ্ট উৎসব হলেও, দুর্গা বা কালী পূজার তুলনায় এই পূজার প্রচলন অপেক্ষ...